December 26, 2024, 6:10 am
মোঃ গোলাম রাব্বানীঃপাথরঘাটা উপজেলায় ২নং ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মহিউদ্দিন পান্নার নামে বসতবাড়ি, ফসলি জমি, দোকান ও ঘরের মালামাল লুটপাট এর অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগকারী রেনু বেগমের সাবেক বেয়াই মহিউদ্দিন পান্না।রেনু বেগম ও তার দুই সন্তান নোমান ও চুমকির দেওয়া জবানবন্দী ও স্থানীয় লোকজনের মুখে জানা যায় পাথরঘাটা থানা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মেম্বার মহিউদ্দিন পান্না খুলনার ভয়ানক শীর্ষ সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদারের সহযোগী ছিল।
রেনুবেগোম এর ছেলে আব্দুল্লাহ আল নোমান প্রবাসে থাকা অবস্থায় মহিউদ্দিন পান্নাকে নির্বাচন করার জন্য এগারো লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। সেই টাকা চাইতে গেলে পান্না মেম্বার এর সাথে বিরোধের সৃষ্টি হয়। পান্না মেম্বারের মেয়ের উগ্র চলাফেরা ও পান্না মেম্বারের জামাইয়ের পাঠানো টাকা আত্মসাৎ এর কারণে পান্না মেম্বার এর মেয়েকে তালাক প্রদান করে অভিযুক্তকারী রেনু বেগমের ছেলে আব্দুল্লাহ আল নোমান।তারই জের ধরে একের পর এক সন্ত্রাসী পান্না তার গ্রুপ নিয়ে হামলা চালায়। পান্না গ্যাংদের ভয়ে রেনু বেগম তার পরিবারের সকল সদস্য নিয়ে নিজ এলাকা ছেড়ে নিরাপত্তাহীনতায় জীবন যাপন করছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল ২০১৯ পান্নার নেতৃত্বে তার বাহিনী দিয়ে আলহাজ্ব আব্দুল খালেক হাওলাদার এর পরিবারের উপর অতর্কিত ভাবে তার বসতবাড়িতে হামলা চালানো হয়। এই ঘটনায় আলহাজ্ব আব্দুল খালেক, তার স্ত্রী রেনু বেগম, ছেলে আব্দুল্লাহ আল নোমান, আত্মীয় মোস্তাফিজুর রহমান রনির উপরে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে এলো পাথারি ভাবে কুপিয়ে যখন করে, পরে রেনু বেগমের চিৎকারে এলাকার লোকজন ঘটনা স্থলে এসে উদ্ধার করে পাথরঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে, নোমান এর অবস্থা অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পরে মামলা হলে পান্না গ্রেফতার হয়। পান্না গ্রেফতার হওয়ার পরে, রেনু বেগম তার নিজ বাড়িতে ঢুকতে গেলে সন্ত্রাসী পান্নার মেয়ে লায়লা আক্তার পপি ও ছেলে ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা তরিকুল ইসলাম আছফি তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে পুনরায় ২৪ মে রেনু বেগমের মাথা ইট দিয়ে থেঁতলে দেয়। পরবর্তীতে পাথরঘাটার থানার ওসি হানিফ সিকদার ঘটনাস্থলে এসে রেনু বেগমকে উদ্ধার করে পাথরঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়, ওসি ঘটনার সত্যতা গণমাধ্যম কর্মীদের প্রকাশ করেন।
দৈনিক কালের কন্ঠ, যুগান্তর, ভোরের পাতা, দৈনিক নয়াদিগন্ত, ও অনলাইন টিভি চ্যানেলে উক্ত ঘটনা সংবাদ আকারে প্রকাশ হয়।এবং প্রত্যক্ষদর্শীরাও ঘটনার সত্যতা গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে তুলে ধরেন। তৃতীয় দফায় সন্ত্রাসী পান্না জেল থেকে জামিনে বের হয়ে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে আনুমানিক ভোর ছয়টায় ১জুন ২০১৯ রেনু বেগমের নিজ বসতবাড়িতে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। অভিযোগ কারীদের জবানবন্দি তে জানা যায়, পান্না গ্যাংরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত ও যখন করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীরা জানায়, স্থানীয় পুলিশ পান্নার নিয়ন্ত্রণে থাকায় প্রশাসন ঘটনা জানার পরেও ঘটনাস্থলে আসেনি, পরবর্তীতে পুলিশ সুপারকে অবগত করার হলে, তিনি বিষয়টি আমলে নিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, ঘটনা স্থলে সার্কেল এসপি, এডিশনাল এসপি সহ পাথরঘাটা থানার ফোর্স এর উপস্থিতি টের পেয়ে পান্না পালিয়ে গেলে পান্নার ছোট ভাই সেলিম ওরফে মোল্লা ও সেলোক আলামিনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠায়।
অভিযোগকারী তথ্যমতে, রেনু বেগমের পরিবার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা আসলে আলহাজ্ব আব্দুল খালেক চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন, এমনকি পান্নার ভয়ে তাহার লাশ এলাকায় নেওয়া সম্ভব হয়নি। সন্ত্রাসী পান্না তার গ্যাং নিয়ে রেনু বেগমের নগদ অর্থ,স্বর্ণ অলংকার সহ বাড়ির যাবতীয় আসবাবপত্র, পাসপোর্ট সহ দলিল এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে এলাকায় পান্না শীর্ষ সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদারের আতঙ্ক ছড়ায়, পান্নার ভয়ে রেনু বেগমের পরিবার এলাকায় ঢুকতে পারেনা, এবং রেনু বেগমের একমাত্র মেয়ে চুমকি কে ফোন করে এলাকায় ঢুকলে এসিড মারা হবে বলে হুমকি দেয়, তাই জীবনের নিরাপত্তা, মিথ্যা মামলা, জোর করে জমি, বসতবাড়ি দোকান দখল প্রসঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশ এর বিশেষ দপ্তর, বরগুনা জেলা পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন করা হয়।
বরগুনা পুলিশ সুপার তাৎক্ষণিকভাবে জেলা গোয়েন্দা শাখা বরগুনা এস আই মোঃ মোস্তফা মনিরুল আলমকে তদন্তের জন্য সরোজমিনে পাঠায়, তদন্ত শেষেডিবির এসআই মনিরুল আলম জানায় বাদিনীর ছেলে লায়লা আক্তার পপিকে তালাক প্রদান করায় মহিউদ্দিন পান্না ও তার লোকজন আলহাজ্ব আব্দুল খালেক কে ভয় ভীতি ও মারধর করার কারণে আব্দুল খালেক ও রেনু বেগম নিজেদের বসতবাড়িতে আসতে পারছে না, যাহা আমার তদন্ত কালে সাক্ষী প্রমাণের সত্যতা পাওয়া যায়। তদন্ত প্রতিবেদন সূত্র স্মারক নাম্বার ২০৫ /বি তারিখ ২২/১/২০১৯। মহিউদ্দিন পান্না কতৃক রেনু বেগমের বসত বাড়িও দোকানপাট দখলের বিষয় নিজে বাদী হয়ে বিজ্ঞ সিনিয়র জুটিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, পাথরঘাটা, বরগুনায় মামলা দায়ের করেন। যাহার সি আর কেস নাম্বার ২৩৩/১৮, ধারা ১৪৩ / ৪৪৮/ ৩৮০ / ৪২৭ / ৪৬১ / ৫০৬ (২) ১১৪ প্যানেল কোড। বর্তমানে নাচনা পাড়া বাজারে রেনু বেগমের মেয়ে জামাইকে দেয়া উপহার এর দোকান ভিটাটি সন্ত্রাসী পান্না দখল করে আছে। এবং রেনু বেগমের নিজ নামের বসতবাড়ি দুটি, একটি দোতলা বিল্ডিং ও একটি একতলা বিল্ডিং ভাড়া দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। বসতবাড়ি ও দোকান খতিয়ান নাম্বার – বি এস ২০৫, ১৫১৯,১০৪৩ মোট তিনটি খতিয়ান, এস এ ৫০৩,৫৫২ দোকান সহ সবকিছু দখল করে এবং এলাকায় ঢুকলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
মানিকখালির স্থানীয় লোকজনের কাছে পান্না সম্পর্কে জানতে চাইলে, তাহারা বলে পান্না মেম্বার হওয়ার পূর্বে যুবদল ও শিবির নেতা ছিল এবং আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পরে এলাকা ত্যাগ করে খুলনাতে ভয়ংকর শীর্ষ সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদারের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন এই ধারাবাহিকতায় খুলনা থেকে এরশাদ শিকদারের লোক পরিচয় বিভিন্ন সময় তাহার সাথে একটি বাহিনী পাথরঘাটার বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা করতো। বর্তমানে সন্ত্রাসী পান্না এলাকার ভয়ানক রাঘববোয়াল হিসেবে পরিচিত। এমন কি পাথরঘাটা থানার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ শাজাহান মিয়ার ইস্কুল দখল করে পান্না ও তার ছেলে ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা তরিকুলইসলাম আসফি।
সরোজমিনে গিয়ে জানা যায় পান্নার ছেলে ইউনিয়ন ছাত্রদলের একটি বাহিনী নিয়ে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। এবং পান্না মেম্বার একজন ভূমিদস্যু, ও পান্না মেম্বার এরশাদ শিকদারের সহযোগী হওয়ার কারণে এলাকার লোকজন প্রকাশ্যে তথ্য দিতে নারাজ। সরোজমিনে আরো জানা যায়, ২৮ শে অক্টোবর সরকার পতনের আন্দোলনে, গ্রাম থেকে লোকজন নিয়ে ঢাকা আন্দোলনে যোগ দেয়।উল্লেখ্য পান্না মেম্বার এরশাদ শিকদারের সহযোগী থাকার কারণে এলাকার সর্বস্তরের মানুষ আতঙ্কিত থাকে, আরো জানা যায় পান্নার বিরুদ্ধে মার্ডার মামলা সহ আরো একাধিক মামলা আছে। তাই উপরোক্ত ঘটনাটি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণে সংবাদ আকারে প্রকাশ করা হলো।